বারেক টিলা- (Barek Tila)
বারেক টিলা (Barek Tila) সুনামগঞ্জ জেলার অহিরপুর উপজেলায় বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত। বারিক্কা টিলা (Barikka Tila) বা বারিক টিলা (Barik Tila) নামেও পরিচিত। টিলার উপর থেকে মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় দেখা যায়। বারিক্কা টিলায় প্রায় ৪০ টি আদিবাসী পরিবার বাস করে। সবুজে পরিপূর্ণ টিলার মধ্য দিয়ে টেকেরঘাট যাবার রাস্তা নির্মিত হয়েছে। বারেক টিলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে আসা যাদুকাটা নদী। বর্ষায় যাদুকাটা নদী বেয়ে ভারত হতে বাংলাদেশে প্রচুর বালু ও পাথর আসে। তখন এখানে বালু ও পাথর তোলার কর্মব্যস্ততা বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।
বারেক টিলা থেকে ৪০ মিনিটের পথ পাড়ি দিলেই বড়ছড়া চারাগাঁও শুরা স্থলবন্দর। বারেক টিলার উপর থেকে যাদুকাটা নদীর দিকে তাকালে যে নৈস্বর্গিক দৃশ্য চোখে পড়ে তার রেশ নাগরিক জীবনের ক্লান্তি নিমিষেই মুছে ফেলার জন্য যথেষ্ট। ক্যাম্পিং করার জন্য বারিক্কা টিলা আদর্শ জায়গা। এখান থেকে সূর্যোদয়ের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।
যা যা দেখবেন
বারেক টিলায় দুইটি মিষ্টি পানির ছড়া রয়েছে। সাধারণত বর্ষাকাল ছাড়া এই ছড়া দুইটিতে তেমন পানি থাকে না। বারেক টিলায় বসবাসকারী স্থানীয় লোকেরা এই ছড়ার পানি ব্যবহার করে থাকে। অপেক্ষাকৃত বড় ছড়াটির অবস্থান তাহিরপুরের দিকে যেতে হাতের বাম পাশে। এই ঝিড়ি দুইটা দেখতে চাইলে কিছুটা ট্রেকিং করে যেতে হবে। আর পথ চিনতে স্থানীয় যে কাউকে বললে দেখিয়ে দেবে।
প্রাচীন লাউর রাজ্যের স্মৃতির সাক্ষী লাউড়ের গড় (Laurer Garh) গ্রামটি বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত ঘেষা যাদুকাটা নদীর তীরে অবস্থিত। এই গ্রামের খুব কাছেই রয়েছে শাহ্ আরিফিনের মাজার বা মোকাম। প্রতি বছর এ মোকামকে কেন্দ্র করে ঐতিহ্যবাহী মেলা বসে। এই মেলা প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
কিভাবে যাবেন
বারেক টিলা আসতে হলে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে প্রথমে চলে আসুন সুনামগঞ্জ শহরে। রাজধানী ঢাকার মহাখালী এবং সায়দাবাদ থেকে প্রতিদিন বেশ কিছু গাড়ি সুনামগঞ্জের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে আসে। সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী আর মামুন পরিবহন আর মহাখালি থেকে এনা পরিবহণের বেশ কিছু এসি এবং নন এসি বাস সুনামগঞ্জ রুটে নিয়মিত চলাচল করে। নন এসি তে ভ্রমণ করলে আপনাকে আনুমানিক ৮২০-৯০০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে। আর এসিতে ভ্রমন করলে আনুমানিক ১২৫০-১৪০০ টাকা গুনতে হবে।
শুকনার সময়ে সুনামগঞ্জ থেকে সি এন জি এবং মোটর সাইকেলে করে সরাসরি বারেক টিলায় আসতে পারবেন। তবে বর্ষায় বোটে করে বারেক টিলায় আসতে পারবেন। বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমনে যারা আসেন তারা সবাই বারেক টিলায় ঘুরে যান।
কোথায় থাকবেন
বারেক টিলার কাছেই বড়ছড়া বাজার। সেখানে সাধারণ মানের কয়েকটি রেস্ট হাউজ আছে। থাকতে হলে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা খরচ করতে হবে। তাহিরপুর বাজারেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে আর যদি খালি থাকে তবে নীলাদ্রী লেকের কাছে পুরাতন চুনা পাথরের কারখানার গেস্ট হাউজে রাত কাটাতে পারবেন।
এছাড়া সুনামগঞ্জ শহরে ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল পাবেন। কয়েকটি হোটেলের নাম ও ঠিকানা
♦ হোটেল সারপিনিয়া জগন্নাথবাড়ী রোড,
♦ সুনামগঞ্জ হোটেল নূর পূর্ব বাজার স্টেশন রোড,
♦ সুনামগঞ্জ হোটেল মিজান, পূর্ব বাজার,
♦ সুনামগঞ্জ সুরমা ভ্যালী আবাসিক রিসোর্ট হোটেল নূরানী,
♦ পুরাতন বাস স্ট্যান্ড,
♦ সুনামগঞ্জ হোটেল প্যালেস,
♦ পুরাতন বাসস্ট্যান্ড,
♦ স্টেশন রোড।
কোথায় খাবেন
বারেক টিলাতে খাবারের হোটেল রয়েছে। এছাড়া বড়ছড়া বাজার কিংবা যাদুকাটার পাশের টেকেরঘাটের ছোট বাজারে মোটামুটি মানের দুইটি রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।
বারেক টিলার কাছাকাছি আরো কিছু ভ্রমণের স্থান
❑ টেকের ঘাট
❑ লাকমা ছড়া
❑ মেঘালয় পাহাড় সাইটসিং।